lifeWIN.in

আমি নীল


Listen My Songs

হ্যালো ,আমি নীল. একজন প্রবাসী বাঙালি. বিগত চার দশক আগে পশ্চিম বঙ্গ ছেড়ে কর্ম ক্ষেত্রে আমাদের এই বিশাল দেশ ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় কর্ম রত থাকার পর শেষমেষ আমার ঠাঁই হয়েছে আমার অত্যন্ত প্রিয় শহর চেন্নাইয়ে। বঙ্গোপ সাগরের ধারে এক আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিঙের কোনো এক তলায় আমার বাসস্থান। পূবদিকের ব্যালকনিতে বসে বসে যতদূর চোখ যায়শুধু সমুদ্র আর সমুদ্র। মাঝে মাঝে বিশাল পণ্য বাহী জাহাজের দেখা মেলে। সকাল সন্ধ্যা মৃদুমন্দ বাতাস মনকে মুগ্ধ করে দেয়. তবে সবথেকে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য হলো, বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে সূর্য ওঠা। ভাঙা ভাঙা মেঘের মাঝ দিয়ে গাঢ় কমলা রঙের রশ্মিগুলো এমন ভাবে চারিদিকটাকে অলংকৃত করে দেয়, দেখে মনে হয় যেন কোনো এক পরী নিজেকে অলংকৃত করে তার প্রেমিককে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কমলা আকাশের ফাঁক দিয়ে সমুদ্রের ওই নীল সাদা ঢেউয়ের ওপর সূর্যের রশ্মিগুলো এমন এক মনোরম দৃশ্য তৈরী করে যা দেখে মনে হয় যেন ওই সিঁড়ি বেয়েই আমাদের এই পৃথিবী থেকে সোজা স্বর্গের দুয়ারে পৌঁছে যাই। আর সন্ধ্যে হলেই মনে হয় আকাশের ওই ঝিকিমিকি তারা গুলো সশরীরে নেমে এসেছে পৃথিবীর বুকে। এক কথায় বলতে গেলে বলতে হয় "অদ্ভুত" ।

গান আমি ভালোবাসি এবং এই ভালোবাসাই আমাকে গান গাওয়ার প্রেরণা যোগায়। নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে আমি কিছুদিনের জন্য কলকাতায় ছিলাম। সেই সময় একদিন একজন শুভাকাঙ্খী আমার গান শুনে আমায় বলেন "গলাটা আপনার বেশ ভালো। যদি পারেন একবার শ্রী জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এর কাছে একটু তালিম নিয়ে নিন"। উনি এও বললেন "আমার নাম করে বলবেন আপনার কোনো অসুবিধে হবে না "। পরের দিন আমি ছুটলাম তাঁর গল্ফ গ্রীনের বাসস্থানে। সেই খানে আমার দেখা হয়ে গেলো কিংবদন্তি ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তর সঙ্গে। কি অমায়িক! কি তাঁর ভদ্রতা। তিনিই আমাকে শ্রী জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট বাড়িটা দেখিয়ে দিলেন। ওপরে গিয়ে কলিং বেল টিপতেই একজন ভদ্রমহিলা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করেন "কি চাই?" আমার কথা শুনে আমাকে ভেতরে ডাকেন। দুই বেড রুমের ফ্ল্যাট, এক ঘরে উনি তখন তাঁর ছাত্রছাত্রীদের গান শেখাতে ব্যস্ত। কিছুক্ষন পর আমার ডাক এলো। জীবনে প্রথমবার এমন এক কিংবদন্তি শিল্পীর সামনে দাঁড়িয়ে আমি একেবারে হতোবম্ব হয়ে পড়ি। সত্যি বলতে কি আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না কি করবো। উনি আমায় পাশে টেনে বসিয়ে জিজ্ঞেস করলেন "তোর নাম কি, কি করিস, কোথায় থাকিস আরো কত কি"। এই সব প্রশ্নের মাঝে আমার হঠাৎ মনে পড়লো আরে ,আমি তো তাঁকে প্রণাম করতে ভুলে গেছি! সঙ্গে সঙ্গে উঠে পড়লাম এবং তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে উনার পায়ে হাত দিয়ে উনার আশীর্বাদ নিলাম। কিছুক্ষন পরে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলে আমি তাঁকে আমার বক্তব্য জানাই। উনি খুশি খুশি আমাকে তাঁর শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করে গানের তালিম দেয়া শুরু করে দিলেন। সত্যি বলতে উনিই আমার গুরু, খুঁটিনাটি জিনিস গুলো কত সহজ ভাবে আমাকে শিখিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমার এই তালিম দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। মাত্র কয়েক মাস হতেই কলকাতা থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে পাড়ি দিতে হলো ভারতবর্ষের অন্য প্রান্তে। তবে নির্দ্বিধায় স্বীকার করি ওই স্বল্প দিনের তালিমটা আমাকে অনেক অনেক সাহায্য করে চলেছে আজও। তাঁকে কি ভাবে শ্রদ্ধা জানাবো তা আমার জানা নেই। আজ আমার গাওয়া এই গানের মাধ্যমে আমি তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা নিবেদন করলাম।

Listen My Songs


হটাৎ করে গানের জগতে চলে আসা এটা বললে মনে হয় ভুল বলা হবে। বহুদিন ধরেই ভাবনা চিন্তা করছিলাম এই বিষয় নিয়ে। কিন্তু ভাবলেই তো আর হয়ে ওঠে না। তাছাড়া কোন বিষয় কে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন সেটাও সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। আমার ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে. তবুও হাল ছেড়ে না দিয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছি এই বিশ্বাস নিয়ে যে একদিন অবশ্যই এই জগতে আমার প্রবেশ হবেই। অনেক গবেষণা করেছি, মানে কি ভাবে এগোতে হবে এই নিয়ে। আমার ছোট বোন কবিতা লেখে। সত্যি বলতে কি বেশ ভালো লেখে। আমি সেগুলো পড়ি। এমন অনেক কবিতা আছে সেগুলো পড়তে পড়তে মনে হলো যেন এগুলো দিয়েই তো বেশ ভালো গান হতে পারে। ওকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে ওঠে "ধুর! এগুলো দিয়ে গান হয় নাকি? কেউই শুনবে না। তাছাড়া আমাদের কে চেনে? শুধু সময় নষ্ট করা।"

ওর নেতিবাচক কথা শুনে আমি বেশ বিরক্ত বোধ করি। "একজন মানুষ বিভিন্নভাবে নিজেকে প্রকাশ করে। আবার প্রকাশ করবার ব্যাপারে মাধ্যমেরও ভূমিকা থাকে। কথায় যা প্রকাশ পায় না, তা হয় তো ছবিতে, গানে, অভিনয়ে বা অন্য মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। আমাদের গান এ ক্ষেত্রে এক ভূমিকা নেবে আশা করি।" এই কথাটা ওকে বোঝাতে সমর্থ হই এবং একেবারে নিশ্চিত করে স্থির করে ফেলি যে ওর কবিতা দিয়েই গান আমি বানাবো। যেমন ভাবা ঠিক তেমন করা। ঘন্টার পর ঘন্টা চিন্তা করা, লেগে থাকা এবং ফলস্বরূপ প্রথম একটা গান তৈরী করলাম। আমার বেশ ভালো লাগলো। আমার স্ত্রীকে শোনালাম। সে তো শুনেই আমাকে বললো "আর সময় নষ্ট না করে এগিয়ে যাও"। তার কথা শুনে খুব অনুপ্রাণিত হলাম এবং আমার ছোট বোনের লেখা বেশ কিছু গানের সুর বেঁধে নেমে পড়লাম। শুরু হল এক নতুন জগতে পথ চলা। গানের কথা,সুর, গলার অনুরনন,গলার স্বর প্রক্ষেপন, আবহ সবকিছুকে ঠিকমতো মিলিয়েমিশিয়ে গানগুলোর মধ্যে এক নুতনত্ব এনে তাদেরকে উপযোগী এবং জীবন্ত করে তোলার চেষ্টা করেছি। আশা করি গানগুলির বাস্তব রূপ সহজেই ফুটে উঠবে মানস পটে।

আমি সাধনা ব্যানার্জী (রায়)

Listen My Songs

উত্তর বঙ্গের একটি জেলার একটি সুন্দর গ্রামে আমার জন্ম। শৈশব, কৈশোর সেই গ্রামেই কেটেছে। পরবর্তীতে শহরাঞ্চলে প্রবেশ। বর্তমানে বিবাহ সূত্রে দক্ষিণবঙ্গের অধিবাসী। আমি একজন গৃহকত্রী,যাকে বলে'হোমমেকার'।

জন্ম থেকেই একটি সদর্থক পরিবেশে, একটি রুচিশীল পরিবারে আমার বেড়ে ওঠা। আমাদের অভিভাবকেরা আমাদের ভাই_বোনেদের মধ্যে একটি নৈতিক, সাংস্কৃতিক, চারিত্রিক শিক্ষার বীজ বপন করার চেষ্টা করে গেছেন। এই বিষয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা গুরুদের অবদান ও অনস্বীকার্য।

ছোটবেলা থেকেই একটু ছন্দ মিলিয়ে কথা বলার চেষ্টা করতাম হাস্যরসাত্মক ভাবে। পরবর্তীতে একসময় কোথাও যেন একটু ছন্দপতন হয়ে পড়েছিল কালের নিয়মে সংসার যাত্রায় প্রবেশ করার পর নানাবিধ কর্তব্য পালনের চিন্তায়।

বর্তমানে কিছুটা সময় নিজের জন্য ব্যয় করার কথা আমার ছোটদা বারবার বলতে থাকে। সেই আমাকে একপ্রকার জোর করে খাতা_কলম নিয়ে বসতে বাধ্য করে, একসময় যেটি আমি হাস্যচ্ছলে করতাম তার পরিস্ফুটন ঘটানোর চেষ্টা করে। সবসময় ওর এই সদর্থক পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা আমাকে এই লেখার বিষয়ে ভাবতে সাহায্য করে এবং আমি লেখার ব্যাপারে মনস্থির করি। তার সংগে আমার উভয় পরিবারের কাছে থেকে ও সহযোগিতা পায়। আমাদের বিদ্যালয়ের একপ্রণম্য শিক্ষা গুরুর আশীর্বাদ ও অনুপ্রেরণায় ওআমি লেখা শুরু করেছি।

আশাকরি অত্যন্ত সহজ, সরল ভাষায় আমার লেখনীর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর কবিতায় রূপদান করতে পেরেছি। যেগুলো পরিস্ফুটিত হয়েছে আমার ছোটদার গায়কীর মাধ্যমে এবং যেগুলো শ্রোতাদের মনের গভীরে প্রবেশ করতে পারবে।

আমার প্রথম বাংলা কবিতার বই "বিনি সুতোর মালা"। সম্মিলিত কবিতাগুচ্ছ বর্তমান মানবিক অবস্থা, প্রেম ও জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিচার করে কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করার এক প্রচেষ্টা । আমি আশা করবো আমার এই প্রচেষ্টা আপনাদের মুগ্ধ করবে ।

  • বিনি সুতোর মালা পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Listen My Songs
No of Visitors: web counter

WebSite is developed by Neil Roy